১৫ পদ্মা সেতু করার মতো টাকা পড়ে আছে ‘বেকার’!
- by নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া বিদেশি ঋণসহায়তার ৪ লাখ ৫২ হাজার কোটি টাকা বেকার পড়ে আছে। যা দিয়ে পদ্মা সেতুর সমান দৈর্ঘ্যের আরো অন্তত ১৫টি সেতু তৈরি করা সম্ভব। গত মাসে প্রকাশিত অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, ইআরডির ‘ফ্লো অব এক্সটারনাল রিসোর্স’ প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
পদ্মা সেতু-বাংলাদেশ ও জাপান
আজ রোববার প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বাধীনতার পর থেকে গেলো অর্থবছর (২০২০-২১) পর্যন্ত উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিশ্রুত ৫ হাজার ৩৪ কোটি ডলার অলস পড়ে আছে। ছাড়ের অপেক্ষায় থাকা এই অর্থ দেশি মুদ্রায় ৪ লাখ ৫৩ হাজার কোটি টাকার সমান।
সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে জানা যায়, অব্যবহৃত এই বিপুল পরিমাণ অর্থ পেতে নানা সময়ে সংশ্লিষ্ট দেশ ও সংস্থার সঙ্গে ঋণচুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ সরকার। তারপরও প্রতিশ্রুত অর্থের পুরোটা ছাড় করা যায়নি। এ জন্য বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের টাকা খরচ করতে না পারার বিষয়টিকে দায়ী করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অর্থ বেকার পড়ে আছে জাপানের কাছে, যার পরিমাণ ৯৮৭ কোটি ডলার বা ৮৯ হাজার কোটি টাকা।
অর্থ মন্ত্রণালয়, ফাইল ছবি
এই তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা রাশিয়ার অলস পড়ে থাকা অর্থের পরিমাণ ৭৮২ কোটি ডলার বা ৭০ হাজার কোটি টাকা। অপরদিকে, বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, আইডিএ’র ৭৫৫ কোটি ডলার বা ৬৮ হাজার কোটি টাকা পড়ে আছে, যা তৃতীয় সর্বোচ্চ।
এ ছাড়া প্রতিবেশী ভারতের ৬৫৮ কোটি ডলার বা ৫৯ হাজার কোটি টাকা ঋণ ছাড় করানো যায়নি। একই সঙ্গে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক বা এডিবির ৬০৫ কোটি ডলার বা সাড়ে ৫৪ হাজার কোটি টাকা পড়ে আছে। এই তালিকায় রয়েছে আরো কিছু দেশ ও সংস্থার নাম, যাদের অংকও একেবারে কম নয়।
স্বাধীনতার পর এখন পর্যন্ত দেশের মোট ঋণ সহায়তার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ১৩৬ কোটি ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯ লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ঋণ ৭ হাজার ২৮৪ কোটি ডলার, বাকি ২ হাজার ৮৫২ কোটি ডলার অনুদান।
এ বিষয়ে সরকারের একাধিক নীতিনির্ধারক ও বিশেষজ্ঞ বলছেন, বিদেশি ঋণের অর্থ ব্যয়ে স্বচ্ছতা থাকা জরুরি, নয়-ছয় করা কঠিন। তবে সরকারি অর্থ খরচের বেলায় এ ক্ষেত্রে ততটা কঠোরতা নেই। এসব কারণে কর্মকর্তাদের বিদেশি ঋণের চেয়ে সরকারি টাকায় মনোযোগ বেশি। বছরের পর বছর এই বিপুল পরিমাণ অর্থ অলস বা বেকার পড়ে থাকার এটিও একটি কারণ।
Comments
Post a Comment